শাহরিয়ার ফারজানা
হাত বাড়িয়ে তোমায় একটু করে
ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমার সব কিছু ভিজিয়ে দিলে তোমার দুষ্টু
আচরণে লজ্জায় আমি জড়সড় হয়ে গিয়েছিলাম। তবুও হঠাৎ করে তোমার অপ্রত্যাশিত
স্পর্শ আমার ভালো লেগেছে বিধায় কোনরকম অভিযোগ নেই তোমার কাছে। তাপ দগ্ধ
মাটির বুকে তোমার স্নিগ্ধ ধারা পৌঁছার পূর্বে গভীর মেঘের স্পর্শের জন্য
মাটির সব আকুলতা প্রকৃতির রঙে রেখায় যখন মিশে যায় তখন বাংলাদেশের বুকে
তোমার ঋতুর আগমনটাকে খুব আপন মনে হয়। তোমার অবিরাম ছন্দপতনে আমি অনেক সময়
আনন্দিত হই, আবার
কখনো বিষণ্ন হই। মাঝে মাঝে আমি অস্থির ব্যাকুল হৃদয়ে তাকিয়ে তাকি তোমার
পানে। তুমি আসলেই আমার চারপাশ কেন জানি মুখরিত হয়ে যায়। সবুজ সজীবতায় ভরে
উঠে আমার হৃদয়ের প্রাঙ্গণ। আমি তোমাকে ভালোবাসি খুব করে কিন্তু তোমার
দীর্ঘস্থায়ী বসত আমার একটুও ভালোলাগে না। তুমি আসলেই চারদিকে থই থই জলধারা
স্যাঁত স্যাঁতে ঘরবাড়ি, কাজের প্রয়োজনে পথ চলতে গিয়ে হাজারো জটিলতা, কেমন জানি মুহূর্তেই তোমার প্রতি ভালোলাগা, দুর্বিষহ
হয়ে ওঠে। তারপরেও আমি জানি প্রকৃতির প্রেমিরা তোমার আগমণের অপেক্ষায়
বরাবরই উন্মুখ হয়ে থাকে। তাদের মত আমি তোমার অপেক্ষায় বসে বসে ভাবি- হৃদয়ের গভীরে যত না বলা কথা আছে সব বুঝি আজ বলে দেব তোমার কাছে। আবার কি যে বলবো, কিভাবে বলব তা কিছুতেই ভেবে পাই না, হে বর্ষা, তোমার
মুখরিত সন্ধ্যায় হৃদয়ের আর্তি প্রকাশের কোন ভাষা থাকে না আমার কাছে।
অব্যক্ত বেদনা গুলো ভাষা হয়ে বের হতে চাই বার বার। হৃদয়ের গহীনে আটকে পড়া
ছোট ছোট দুঃখ বেদনা গুলো অনেক সময় বৃষ্টির ধারা বর্ষণকে তুচ্ছ করে দেয়, এমনও
হয় অগোছালো হৃদয় ছেঁড়া ব্যাকুলতা নিয়ে ঘরের ভেতরে খোলা জানালার পাশে বসে
উদাস দৃষ্টি নিয়ে মেঘলা আকাশ পানে তাকিয়ে তার কান্না দেখতে দেখতে নিজেকে
ভুলে যাওয়া। রাতের শ্রাবণ দুপুর বিকাল সন্ধ্যা চারপাশে জলের মাতামাতি, বৃষ্টি
ভেজা পাখির অবিরাম ডেকে যাওয়া নীঝুম ধরণীর গুরু গম্ভীর রূপ সবকিছু যেন কোন
এক সুদূরের ডাক নিয়ে আসে বুকের ভেতরে। তখনি বর্ষার গভীর বাণী আমাকে আকুল
করে। কবির ভাষায় বলতে ইচ্ছা করে-“আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার-/পরাগ সখা বন্ধ হে আমার।/আকাশ কাঁদে হতাশগম, নাই যে ঘুম নয়নে মম-/দুয়ার খুলি হে প্রিয়তম, চাই যে বারে বারে॥
কবি লেখকদের হাতে গড়া প্রকৃতির রোমান্টিক প্রতিমা হচ্ছে বর্ষা। এ বর্ষায় বেদনা আছে তবে তা মধুর বেদনা, এখানে চোখের জল আছে তবে তা অকারণ চোখের জল। মাঝে মাঝে অনেক অকারণগুলোও ভালোলাগার কারণ হয়ে উঠে। হে বর্ষা, তুমি এসেছো আমার মাঝে। তাই আমি আনন্দিত আবার তুমি চলে গেলে আমি ব্যাথিত হব। তুমি আমাকে দুঃখ দেবে, সে নতুন কিছু নয়, আমি ঘননীল গভীর দুঃখ অশ্রুপাত ভালোবাসি। সকলে জানে পহেলা আষাঢ়, বর্ষার শুরু গ্রীষ্মের তীব্র তীক্ষ্ণ রোদ আর নেই। পাখির নরম পালকের রঙের মত মেঘের আনাগোনা সারা আকাশ জুড়ে। তারপর কখন যেন নেমে আসে ঝরঝর অবিরল বৃষ্টির ধারা। বর্ষার আগমনে সর্বত্রই যেন একটি আনন্দ শিহরণ বয়ে যায়। মানুষ অনেকক্ষেত্রে ঘরবন্দী হয়ে পড়ে। খুব একটা প্রয়োজনীয় কাজ না হলে অঝোর বৃষ্টি ধারায় কেউ বের হতে চাই না। বিস্তৃত সবুজ শস্যক্ষেত্র বর্ষায় আন্দোলিত হয়। প্রাণ প্রাচুর্য যেন সীমাহীন করে দেয় এ বর্ষা। চারপাশের তরুলতা, বৃক্ষ বৃষ্টিস্নাত হয়ে যেন মাথা দুলিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। খাম-খেয়ালি বাতাস তার মৃদু স্পর্শে অনেক সময় স্বপ্নের আড়ালে নিয়ে যায়- সেই মুহূর্তে নিশ্চুপ শব্দবিহীন অবস্থায় নিজেকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে। বর্ষার শুরুতেই কদম, কেয়া, চামেলি জুঁই ফুলের সুভাসে হৃদয়-মন ব্যাকুলিত হয়। বর্ষায় কিন্তু অসুবিধার দিক থাকলেও বর্ষাই আমাদের প্রাণ শক্তি। সারা বছরের অন্নসংস্থান এ বর্ষা করে দেয়। আমাদের প্রতিদিনের সাদামাঠা জীবনের চালচিত্র বদলে দেয় বর্ষা, বৃষ্টির স্নিগ্ধ দুপুরে মধ্যবিত্ত বাঙালির রসনা তৃপ্তির জন্য আয়োজন হয় খিচুড়ী ভুনা আর ইলিশ ভাজা। এতো সবকিছু মিলিয়ে বর্ষা বাঙালির প্রিয় ঋতু এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই আমি ভালোবাসা বর্ষা ঋতুকে, অনেক ভালোবাসি। লেখক : গল্পকার
কবি লেখকদের হাতে গড়া প্রকৃতির রোমান্টিক প্রতিমা হচ্ছে বর্ষা। এ বর্ষায় বেদনা আছে তবে তা মধুর বেদনা, এখানে চোখের জল আছে তবে তা অকারণ চোখের জল। মাঝে মাঝে অনেক অকারণগুলোও ভালোলাগার কারণ হয়ে উঠে। হে বর্ষা, তুমি এসেছো আমার মাঝে। তাই আমি আনন্দিত আবার তুমি চলে গেলে আমি ব্যাথিত হব। তুমি আমাকে দুঃখ দেবে, সে নতুন কিছু নয়, আমি ঘননীল গভীর দুঃখ অশ্রুপাত ভালোবাসি। সকলে জানে পহেলা আষাঢ়, বর্ষার শুরু গ্রীষ্মের তীব্র তীক্ষ্ণ রোদ আর নেই। পাখির নরম পালকের রঙের মত মেঘের আনাগোনা সারা আকাশ জুড়ে। তারপর কখন যেন নেমে আসে ঝরঝর অবিরল বৃষ্টির ধারা। বর্ষার আগমনে সর্বত্রই যেন একটি আনন্দ শিহরণ বয়ে যায়। মানুষ অনেকক্ষেত্রে ঘরবন্দী হয়ে পড়ে। খুব একটা প্রয়োজনীয় কাজ না হলে অঝোর বৃষ্টি ধারায় কেউ বের হতে চাই না। বিস্তৃত সবুজ শস্যক্ষেত্র বর্ষায় আন্দোলিত হয়। প্রাণ প্রাচুর্য যেন সীমাহীন করে দেয় এ বর্ষা। চারপাশের তরুলতা, বৃক্ষ বৃষ্টিস্নাত হয়ে যেন মাথা দুলিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। খাম-খেয়ালি বাতাস তার মৃদু স্পর্শে অনেক সময় স্বপ্নের আড়ালে নিয়ে যায়- সেই মুহূর্তে নিশ্চুপ শব্দবিহীন অবস্থায় নিজেকে নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে। বর্ষার শুরুতেই কদম, কেয়া, চামেলি জুঁই ফুলের সুভাসে হৃদয়-মন ব্যাকুলিত হয়। বর্ষায় কিন্তু অসুবিধার দিক থাকলেও বর্ষাই আমাদের প্রাণ শক্তি। সারা বছরের অন্নসংস্থান এ বর্ষা করে দেয়। আমাদের প্রতিদিনের সাদামাঠা জীবনের চালচিত্র বদলে দেয় বর্ষা, বৃষ্টির স্নিগ্ধ দুপুরে মধ্যবিত্ত বাঙালির রসনা তৃপ্তির জন্য আয়োজন হয় খিচুড়ী ভুনা আর ইলিশ ভাজা। এতো সবকিছু মিলিয়ে বর্ষা বাঙালির প্রিয় ঋতু এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই আমি ভালোবাসা বর্ষা ঋতুকে, অনেক ভালোবাসি। লেখক : গল্পকার