তামিম ইকবালের ডাবল সেঞ্চুরির কল্যাণে খুলনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ ড্র করেছে।
আজ শনিবার টেস্টের শেষ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান করার পর ম্যাচটি ড্র হয়ে যায়।এই টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি এবং বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছেন তামিম ইকবাল। এছাড়াও এই ম্যাচেই পার্টনারশিপের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি।
প্রায় ৫ মাস বিরতির পর আবার আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটের মাঠে উপস্থিত বাংলাদেশ দল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে না পারলেও, সমর্থকদের মন জয় করেই মাঠ ছেড়েছে।
খেলার পাঁচ দিনই প্রায় ১২ হাজার ধারণক্ষমতার খুলনার আবু নাসের স্টেডিয়াম ছিল পরিপূর্ণ। আর দেশজুড়ে ক্রিকেটামোদী দর্শকদেরও চোখ আটকে ছিল টেলিভিশন পর্দায়।
প্রথম ইনিংসে আরো বড় স্কোরের সুযোগ হাতছাড়া হলেও, পাকিস্তানের করা রানের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে রেকর্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছেন তাতে ড্রয়ের পরও সমর্থকদের জন্য আক্ষেপের সুযোগ খুব কমই ছিল। সাবেক ক্রিকেটার এবং বিশ্লেষক রকিবুল হাসান মনে করছেন, এই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অনেক।
“দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ যেভাবে ফিরে আসলো, তাতেই প্রমাণ হয় বাংলাদেশ কতটা পরিপক্ক একটি দল এবং তাদের মধ্যে আস্থার একটি জায়গাও তৈরি হয়ে গেছে।”
করেছিলো আশংকায়।
তবে সমর্থকদের সেই আশংকাকে একরকম উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের ওপেনাররা খেললেন রেকর্ডভাঙ্গা ইনিংস। তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েসের ৩১২ রানের পার্টনারশিপ ভেঙ্গেছে টেস্ট ক্রিকেটের ৫৫ বছরের পুরনো রেকর্ড। টেস্টে কোন দলের দ্বিতীয় ইনিংসে এটিই সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ।
আর ২৭৮ বলে ২০৬ রান করে নিজের প্রথম দ্বিশতকের পাশাপাশি বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটিও ভেঙ্গেছেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশ দলের সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট বলছেন, এই ইনিংসের মাধ্যমে তামিম তার যোগ্যতার আরেকবার প্রমাণ দিলো।
“তামিম বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য একজন ওপেনার। কখনো কখনো হয়তো তার কিছু খারাপ পার্ফম্যান্সের জন্য সমালোচনা হয়। কিন্তু সে দেখিয়ে দিয়েছে যে সে একজন উঁচুমানের খেলোয়াড়।”
এদিকে তামিমের সাথে ওপেনিং জুটিতে দেড়শ রানের ইনিংস খেলেছেন ইমরুল কায়েস।
অধিনায়ক মুশফিকের চোটের কারণে দীর্ঘসময় কিপিংও করেছেন অনিয়মিত উইকেট কিপার ইমরুল। আর তারপর মাঠে নেমে যে বিশাল ইনিংসটি খেলেছেন তাতে তার ফিটনেস এবং যোগ্যতার একটি সরাসরি প্রমাণ মিলেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশের সাবেক উইকেট কিপার খালেদ মাসুদ।
সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সাথে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের দৃষ্টিভঙ্গিতে যে রূপান্তর দেখা গেছে, তার ছায়া টেস্টেও দেখতে পাচ্ছেন রকিবুল হাসান।
আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাসটাই বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে মনে করছেন খালেদ মাসুদ পাইলট।
কিন্তু প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের সাথে ড্র এবং রেকর্ড ভেঙ্গে সমর্থকদের মন জয় করতে পারলেও, পাকিস্তানের সাথে ৯ টি টেস্টে এখনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।
দলের সাম্প্রতিক পার্ফম্যান্স দেখে সমর্থকরা হয়তো আগামী ৬ই মে থেকে শুরু হতে যাওয়া ঢাকা টেস্টে সেই জয়ের খরা কাটানোর আশায় থাকবেন।