আপনি মুডে আছেন কিনা তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে আপনার খাদ্য। আপনার যৌন জীবন ভালো রাখতে সক্ষম ২০ টি খাদ্যের কথা এখানে থাকছে।
১) দুধ
বেশি পরিমাণ প্রাণিজ-ফ্যাট আছে এ ধরনের প্রাকৃতিক খাদ্য আপনার যৌনজীবনের
উন্নতি ঘটায়। যেমন, খাঁটি দুধ, দুধের সর, মাখন ইত্যাদি। বেশিরভাগ মানুষই
ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চায়। কিন্তু আপনি যদি শরীরে সেক্স হরমোন তৈরি
হওয়ার পরিমাণ বাড়াতে চান তাহলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাবারের
দরকার। তবে সগুলিকে হতে হবে প্রাকৃতিক এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
২) ঝিনুক
আপনার যৌনজীবন আনন্দময় করে তুলতে ঝিনুক খাদ্য হিসেবে খুবই কার্যকরী। ঝিনুকে
খুব বেশি পরিমানে জিঙ্ক থাকে। জিঙ্ক শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং
লিবিডো বা যৌন-ইচ্ছা বাড়ায়। ঝিনুক কাঁচা বা রান্না করে যে অবস্থাতেই খাওয়া
হোক, ঝিনুক যৌনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩) অ্যাসপারাগাস
আপনার যৌন ইচ্ছা বাড়াতে চাইলে যেসব প্রাকৃতিক খাবার শরীরে হরমোনের ভারসাম্য
ঠিক রাখে সেগুলি খাওয়া উচিৎ। যৌনতার ক্ষেত্রে সবসময় ফিট থাকতে চাইলে
অ্যাসপারাগাস খেতে শুরু করুন।
৪) কলিজা
অনেকেই কলিজা খেতে একদম পছন্দ করে না। কিন্তু আপনার যৌন জীবনে খাদ্য হিসেবে
কলিজার প্রভাব ইতিবাচক। কারণ, কলিজায় প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। আর এই
জিঙ্ক শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেশি পরিমাণে রাখে। যথেষ্ট পরিমাণ
জিঙ্ক শরীরে না থাকলে পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয় না।
পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা টেস্টোস্টেরন তৈরি হওয়াতে
সাহায্য করে। তাছাড়া জিঙ্ক এর কারণে আরোমেটেস এনজাইম নিঃসৃত হয়। এই
এনজাইমটি অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরোনকে এস্ট্রোজেনে পরিণত হতে সাহায্য করে।
এস্ট্রোজেনও আপনার যৌনতার জন্য প্রয়োজনীয় একটি হরমোন।
৫) ডিম
ডিম সারা দুনিয়াতেই উর্বতার প্রতীক হিসাবে চালু আছে। কিন্তু খাদ্য হিসাবে
ডিম আপনার যৌন সামর্থ্য বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ডিমে প্রচুর পরিমাণে
বি-ফাইভ, বি-সিক্স থাকে। বি-ফাইভ এবং বি-সিক্স হরমোন লেভেলের ভারসাম্য
রক্ষা করে এবং ক্লান্তি দূর করে।
৬) ক্যাভিয়ার
ক্যাভিয়ারেও ডিমের মত বি-ফাইভ এবং বি-সিক্স ভিটামিন থাকে।
৭) কলা
কলাতে প্রচুর পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি এবং ব্রুমাইল্ড এনজাইম থাকে। এইসব উপাদান যৌন আসক্তি বাড়ায়।
৮) মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু শুধু শর্করার ভালো বিকল্পই না, মিষ্টি আলু খুব ভালো ধরনের একটি
‘সেক্স’ ফুড। আপনার শরীর কোনো সবজিতে বিটা-ক্যারোটিন পেলে তা ভিটামিন-এ তে
রূপান্তরিত করে। এই ভিটামিন-এ নারীদের যোনি এবং ইউটেরাসের আকার ভালো রাখে।
তাছাড়া এটা সেক্স হরমোন তৈরিতেও সহায়তা করে।
৯) কফি
কফি আপনার যৌন ইচ্ছা বাড়ানোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কফিতে যে ক্যাফেইন থাকে তা আপনার যৌনতার মুড ঠিক রাখে।
১০) চকোলেট
চকোলেট স্বাদ আপনাকে আনন্দে থাকতে সাহায্য করে। চকোলেটে থিওব্রোমাইন নামে
এক ধরনের কেমিক্যাল থাকে। এই এলকালয়েড জাতীয় যৌগটি ক্যাফেইনের মত কাজ করে।
এই যৌগের কারণে সেরেটোনিন তৈরি হয়। এই সেরেটোনিন আপনার যৌন ইচ্ছার জন্য
দরকারী।
১১) কুমড়ার বীচি
কুমড়ার বীচি জিঙ্ক-এর অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক উৎস। এই জিঙ্ক টেস্টোস্টেরোনের
মাত্রা বাড়ায়। আপনার যৌন ইচ্ছা বাড়ানোতে কুমড়ার বীচির কার্যকারিতা অনেক।
১২) ট্রাফল (একধরনের ছত্রাক)
ট্রাফলে পুরুষের যৌন হরমোনের মত একধরনের উপাদান থাকে। কিছু কিছু খাবারে
ট্রাফলের এই বিশেষ কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। যার ফলে, নারীদের পুরুষের
প্রতি লিবিডো বা যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায়। যেমন ম্যাশড পটেটোতে ট্রাফলের
ব্যবহার করা হয়।
১৩) জয়ফল
ভারতীয় গবেষকদের মতে, জয়ফল থেকে এক ধরনের কামোদ্দীপক যৌগ নিঃসৃত হয়।
সাধারণভাবে এই যৌগটি স্নায়ুর কোষ উদ্দীপিত করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ফলে
আপনার যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। আপনি কফির সাথে মিশিয়ে জয়ফল খেতে পারেন,
তাহলে দুইটির কাজ একত্রে পাওয়া সম্ভব।
১৪) সূর্যমুখীর বীজ
ওটমিল এবং কুমড়ার বীচির মত সূর্যমুখীর বীজ হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে
আপনার যৌন আকাঙ্ক্ষাও বাড়ে। সূর্যমূখীর বীজে যে তেল থাকে তা এই কাজটি করে।
১৫) মাছ
ফ্যাটযুক্ত মাছ আপনার যৌন ইচ্ছা বাড়ায়। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ। যেমন,
হেরিং মাছ, ট্রাউট, সার্ডিন, টুনা ইত্যাদি মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড
থাকে। এই কারণে যাদের লিবিডো কম আছে তারা মাছের তেল বা ফিশ-অয়েল সম্পূরক
খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।
১৬) চীনা বাদাম
চীনা বাদামে প্রচুর জিঙ্ক থাকে। এই জিঙ্ক শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়ায় এবং
শক্তিশালী শুক্রাণু তৈরি করে। জিঙ্ক কম থাকলে শরীরে শতকরা ৩০ ভাগ কম বীর্য
তৈরি হয়। যারা খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে কম জিঙ্ক গ্রহণ করে তাদের বীর্য এবং
টেস্টোস্টেরনের ঘনত্ব দুটিই কমে যায়।
১৭) শিমের বিচি
সীমের বীচিতে প্রচুর ফাইটোস্ট্রোজেন থাকে। এটা আপনার যৌন ইচ্ছা এবং যৌন
সামর্থ্য বাড়ায়। জাপানিরা যৌন ইচ্ছা বাড়ানোর জন্য খাবারে প্রচুর সিমের বীচি
ব্যবহার করে থাকে।
১৮) রোস্ট গরুর মাংস
কলিজার মত গরুর মাংসেও প্রচুর জিঙ্ক থাকে। তাই আপনি যৌন জীবনকে আরো আনন্দময়
করতে কম ফ্যাটযুক্ত গরুর মাংস খান। যেমন গরুর কাঁধের মাংসে, রানের মাংসে
কম ফ্যাট থাকে এবং জিঙ্ক বেশি থাকে। এইসব জায়গার মাংসে প্রতি ১০০ গ্রামে ১০
মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে।
১৯) অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোকে এর আকৃতির কারণে একে নারী ফল হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। তবে শুধু
এর আকৃতিই আকর্ষণীয় না, এতে প্রচুর ভিটামিন বি-সিক্স এবং পটাসিয়াম থাকে। এর
ফলে এটা খেলে আপনার যৌন ইচ্ছা এবংযৌন সামর্থ্য বৃদ্ধি পায়। এই ফলের এই
নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যটির কারণে একে স্প্যানিশ প্রিস্টরা নিষিদ্ধ করেছিল।
২০) ওটমীল
ওটমিলে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোস্ট্রোজেন থাকে। যেসব দানাজাতীয় শশ্যে আবরণ
থাকে তাদের মধ্যে এই গুণটি রয়েছে। যেমন গম, চাল, রাই ইত্যাদি।
ফাইটোস্ট্রজেন আপনার যৌন জীবনের জন্য খুবই কার্যকরী।