নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল দেখা দেওয়ায় বড় আকারের বিমান অবতরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভূমিকম্পের মাত্র এক সপ্তাহ পর যখন বাইরে থেকে দ্রুত ত্রাণ সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ, সে সময় এই বাধা তৈরি হল।ওদিকে জরুরী ত্রাণ-কর্মীরা প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে পৌঁছুতে সক্ষম হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এখনো ভূমিকম্পে নিহতের তালিকা লম্বা হচ্ছে এবং সরকারি হিসাবেই এ সংখ্যা সাত হাজারে গিয়ে ঠেকেছে।
সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজধানী কাঠমান্ডুর বিমান বন্দরে একটিই রানওয়ে।
নেপালের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে রিপোর্ট করা হয়েছে যে এই রানওয়েতে ফাটল ধরেছে।
বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেরকম কোনো ফাটল তাদের চোখে পড়েনি। তবে গত এক সপ্তাহে এতোবার কম্পন হয়েছে যে সতর্ক হয়েই তাদেরকে এধরনের ব্যবস্থা নিতে হয়েছে।
বিমান বন্দরের ম্যানেজার বীরেন্দ্র প্রাসাদ শ্রেষ্ঠা বলেছেন, তারা আসলে জানেন না যে রানওয়ের নিচে আসলে কতোটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেছেন, “কাঠমান্ডুর সাথে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্যে এটাই একমাত্র পথ। আর এটা যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তো সবকিছুই শেষ হয়ে যাবে।”
বড় বড় বিমানের উঠানামা নিষিদ্ধ করা হয়েছে কিন্তু মাঝারি ও ছোট ছোট আকারের বিমান ত্রাণসাহায্য নিয়ে সেখানে নামছে উঠছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, রানওয়েতে ছোটখাটো যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছিলো সেগুলো তারা মেরামত করেছেন এবং বিমান উঠা নামাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
ত্রাণের কাজ কিভাবে চলছে
কর্তৃপক্ষ বলছে যে শনিবারের ভূমিকম্পে যেসব প্রত্যন্ত এলাকা সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব এলাকায় তিনশোর মতো উদ্ধারকর্মী গিয়ে পৌছাতে পেরেছে। ২০টির মতো হেলিকপ্টার দিয়ে ত্রাণের কাজ চলছে।
সেখানে ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।
খারাপ আবহাওয়া এবং ভূমিধ্বসের কারণে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে থাকার কারণে এই ত্রাণ বিতরণে অসুবিধা হচ্ছে।
বহু মানুষের কাছে এখনও কোনো সাহায্য গিয়ে পৌঁছায়নি বলেও শোনা যাচ্ছে।
এই কাজে বড়ো একটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শুল্ক বা কাস্টমস সংক্রান্ত কিছু আইন কানুন।
বিমান বন্দরে এই কাস্টমসের প্রক্রিয়া সহজ করতে, এসব মালামাল খুব দ্রুত পরীক্ষা করে ছাড় দেওয়ার জন্যে, নেপাল সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মানবিক ত্রাণ-সাহায্য বিষয়ক সংস্থাটির প্রধান ভ্যালোরি অ্যামোস এসব সাহায্য যাতে দ্রুত ক্লিয়ারেন্স পেতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন।
নেপালের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে বিদেশি সংস্থা থেকে খুব ধীর গতিতে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। এবং যেসব সাহায্য দেওয়া হচ্ছে সেসব কতোটা কাজে লাগবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। যেমন টুনা ফিশ এবং মেয়নেজ দেওয়া হচ্ছে দুর্গতদের।
তারা প্রশ্ন করেছেন, যেখানে লবন চিনি আর খাদ্যশস্যের মতো জরুরী সাহায্যের প্রয়োজন সেখানে এসব ত্রাণের অর্থ কি?