=======================================
সামাজিক মাধ্যম আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, পিন্টারেস্ট সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ তাদের জীবনের বিভিন্ন অনুসঙ্গ প্রকাশ করে থাকেন। সেজন্য এ মাধ্যমটি সবার সাথে যোগাযোগ ও তথ্য শেয়ারের অমূল্য হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এর নেতিবাচক দিকগুলো এড়াতে কিছু ম্যানার বজায় রাখা প্রয়োজন।
১. সাংসারিক সমস্যা নিয়ে পোস্ট;
আপনার স্ত্রী কিংবা ভালোবাসার মানুষের সাথে সম্পর্কের টানাপড়েনের বিষয়গুলো কখনোই সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করবেন না। কারণ এগুলো দুনিয়ার সবাইকে বলে আপনি যথার্থ সাহায্য পাবেন না। কেননা, আপনার ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যা নিয়ে মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকারই কথা। তবে আপনি যদি বিশিষ্ট কেউ হন তবে আলাদা কথা। সেক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যম নানা ধরনের গুজব সৃষ্টি হতে পারে। হতে পারে গণমাধ্যমে রিপোর্টও। ফলে আপনি সামাজিকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। সেজন্য সাংসারিক এসব বিষয়ের সমাধানের জন্য কাছের কোনো বন্ধু বা পরিবারের কারো সাথে আলাপ করতে পারেন।
২. সুনির্দিষ্টভাবে আপনার অবস্থান জানানো;
পোস্ট দেয়ার ক্ষেত্রে নিজের সুনির্দিষ্ট অবস্থানের কথা জানানো অনেকের অভ্যাস। কিন্তু আপনার নিরাত্তার জন্যই তা থেকে বিরত থাকা উচিত। নিজের অবস্থানের কথা সুনির্দিষ্টভাবে জানিয়ে অনেকেই শিকারীর সহজ টার্গেটে পরিণত হন। বিশেষ করে আপনি যখন প্রত্যন্ত এলাকা কিংবা একান্ত একাকী থাকেন অথবা বাসা খালি রেখে কোথাও বের হন- তা ভুলেও সামাজিক মাধ্যমে জানাবেন না।
৩. খোলা শরীরের ছবি পোস্ট করা;
বর্তমানে অনেকে শরীরের খোলামেলা ছবি পোস্ট করতে মোটেই লজ্জাবোধ করেন না। এক্ষেত্রে হয়তো আপনি বেশি 'লাইক' পেতে পারেন, রিটুইটও হতে পারে বেশি। কিন্তু আপনার প্রতি অনেকের শ্রদ্ধাবোধ হারাতে পারেন এর মাধ্যমে। আরে এটা যদি ইন্টারেনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেটা আপনার ক্যারিয়ার বা কাজের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর হতে পারে।
৪. নিজের বস, চাকরি বা সহকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ;
আপনি যদি চাকরিজীবী হন, তাহলে ভুলেও নিজের বস, চাকরি বা সহকর্মীর ব্যাপারে সামাজিক মাধ্যমে নেতিবাচক ফিডব্যাক দিবেন না। এমনকি কর্মক্ষেত্রে আপনার মানসিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে পোস্ট দেয়া থেকেও বিরত থাকুন। ‘bored at work’ অথবা ‘can’t wait for Friday’-এ টাইপের পোস্টও আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কেননা আপনার বর্তমান বা ভবিষ্যৎ কোনো চাকরিদাতা এসব দেখলে বিষয়টিকে সহজভাবে না-ও নিতে পারেন।
৫. বিতর্কিত আলোচনায় অংশ নেয়া;
যদিও যে কোনো বিষয়ে মতামত দেয়ার অধিকার আপনার আছে। কিন্তু সংবেদশনশীল বিষয় বা সংবাদের ক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যমে মতামত না দেয়াটাই ভালো। রাজনীতি, রাজনীতি ও ধর্ম বিষয়ে লিখলে সুষ্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করুন এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন।
৬. বিতর্কিত ছবি পোস্ট;
বন্ধুদের সাথে বাইরে কাটানো একটি শালীন ছবি আপনি পোস্ট করতেই পারেন। কিন্তু মদ, গাজা, ড্রাগ সেবনরত কিংবা সাধারণত অশালীন মনে করা হয় -এমন ছবি ভুলেও পোস্ট করবেন না। কারণ এটা শুধু নিজেকেই নয়, আপনার পরিবারকেও বিব্রত করতে পারে। এসব ছবি আপনার চাকরিদাতার নজরেও আসতে পারে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখেও পড়তে পারে।
৭. ধন-সম্পদের প্রদর্শনী;
ধরুন আপনি একটি গাড়ি কিনলেন। অথবা ফার্নিচার, গহনা কিংবা ল্যাপটপ। সব কিছু সামাজিক মাধ্যমে বলার দরকার নেই। এমনকি আপনার সম্প্রতি অর্জিত ধনসম্পদের ছবিও নয়। কারণ এটা অাপনার বাড়িতে সিদেঁল চোর, ডাকাত বা দুর্বৃত্তকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে। সামজিক মাধ্যমে আপনার বিচক্ষণতা শুধু আপনার সম্পদ রক্ষাই করবে না। আপনাকে ও আপনার প্রিয় মানুষদেরকেও রক্ষা করতে পারে। [ সংগৃহীত ]